বৃহস্পতিবার, ১৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, দুপুর ১:৪৬

শিরোনাম :
কথা দিচ্ছি আপনাদের সেবায় আমি সর্বদা পাশে থাকবো : চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম জাকির হোসেন উপজেলার উন্নয়নে আপনাদের পাশে আমি সর্বদা রয়েছি -ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন মোটরসাইকেল প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা, আহত-২ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়া কে এই জাকির হোসেন প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ

ঢাকা-বরিশাল সড়ক পথে নিরব চাঁদাবাজির শিকার যাত্রীরা

dynamic-sidebar

এম.কে. রানা ॥ ঢাকা-বরিশাল সড়ক পথে নিরব চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। ঢাকা থেকে মাওয়া-কাওড়াকান্দি হয়ে দক্ষিণাঞ্চলগামী যাত্রীরা দীর্ঘদিন হয়রানী হলেও বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে হয়রানীর মাত্রা আরো বেড়ে গেছে। যদিও বর্তমান মহা পুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে উদাসীন। ফলে ভুক্তভোগী যাত্রীরা পথিমধ্যে অনেকটা নিরুপায় হয়েই এ চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করতে পারছেন না। কেউ কেউ প্রতিবাদ করলেও শ্রমিকদের হাতে লাঞ্ছিত হতে হন তারা। এ ব্যাপারে শীঘ্রই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা
জানিয়েছেন প্রশাসন।

 

 

সূত্রমতে, ঢাকা থেকে সড়ক পথে মাওয়া হয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার যাত্রী দক্ষিণের ৬ জেলায় যাতায়াত করেন। সময় বাঁচাতে এদের মধ্যে অনেকেই মাওয়া-কাওড়াকান্দি রুট হয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে আসেন। ওই সব যাত্রীদের হয়রানীর শুরুটা হয় ঢাকার গুলিস্থান এলাকা থেকে। গুলিস্থান থেকে একাধিক নামীয় বাস যাত্রীদের কাছে ১২০ টাকা ভাড়া নিচ্ছে। যদিও টিকিটের গায়ে বর্তমান ভাড়া লেখা রয়েছে ১০০ টাকা।

 

 

এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বাসের স্টাফদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, “খরচা” আছে, তাই ২০ টাকা অতিরিক্ত। করোনার পূর্বে এ ভাড়া ৬০ টাকা নির্ধারিত ছিল। ডাবল সিটের ভাড়া আদায় করলেও বেশিরভাগ বাসে দু’জনের সিটে দু’জনই নিয়ে যাত্রা করে গাড়িগুলো।

 

স্পিডবোটঃ মাওয়া থেকে কাওড়াকান্দি রুটে লঞ্চ ও ফেরী চলাচল করলেও প্রায় আড়াই ঘন্টা সময় ব্যয় হয় যাত্রী/বাস পারাপার করতে। তাই সময় বাঁচাতে এ রুটের অনেক যাত্রী স্পিডবোটে উঠেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিটি স্পিডবোটে ১২ থেকে ১৫ জন যাত্রী নিয়ে পারাপার করছে। যেখানে সামাজিক দূরত্ব নেই। অথচ যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে স্পিডবোট চালকরা। ৮০ টাকার ভাড়া এখন ২০০ টাকা। ক্ষেত্র বিশেষে আবার আড়াইশ টাকাও নেয়া হয় বলে জানা গেছে। তবে যাত্রী টিকিটের গায়ে কোন ভাড়া উল্লেখ না থাকলেও সুন্দর করে লেখা রয়েছে “সততাই সুপার পাওয়া (!)”

মাইক্রোবাসঃ কাওড়াকান্দি থেকে খুলনা, বরিশাল, টেকেরহাট রুটে প্রায় সহস্রাধিক মাইক্রোবাস চলাচল করছে। করোনা’র অজুহাতে এখানেও চলে নিরব চাঁদাবাজি। প্রত্যেক যাত্রীদের কাছ থেকে ২৫০ টাকার ভাড়া এখন ৪শ’ করে নেয়া হচ্ছে। তাও আবার সামনের সিটে বসতে হলে তাকে গুনতে হবে ৫শ’ টাকা। যাত্রী টিকিটের গায়ে প্রতি সিট ভাড়া লেখা থাকলেও বর্তমানে তা কালি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। ওই টিকিটের উপরিভাগে ছোট্ট করে লেখা রয়েছে “অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নহে”। তাহলে হয়রাণীর শিকার যাত্রীরা কোথায়? কার কাছে অভিযোগ করবেন?

অপরদিকে মাইক্রোবাসে পূর্বে ১২/১৪ জন যাত্রী ঠাসাঠাসি করে বসিয়ে মাওয়া রুটে চলাচল করতো। বর্তমানে ৯ জন যাত্রী নিয়ে চলছে মাইক্রোবাসগুলো। সামাজিক দূরত্বের নামে যাত্রী সংখ্যা ৩ জন কমলেও ভাড়া বেড়ে দ্বিগুন হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল-মাওয়া রুটে দীর্ঘদিন ধরেই মাইক্রোবাস চলাচল করছে। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন। যখন যে সরকার, তখন তাদের নিয়ন্ত্রণ থাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মাইক্রোবাস চালক বলেন, প্রত্যেকটি ট্রিপে যাত্রী যতজনই হোক না কেন, স্ট্যান্ড ফি বাবদ ১ হাজার টাকা দিতে হবে। যা প্রত্যেক যাত্রীদের কাছ থেকেই আদায় করা হয়। স্ট্যান্ড ফি কমানো হলে যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া কম নেয়া যেতো বলে মনে করেন এই চালক। এছাড়া স্ট্যান্ড ফি দিতে রাজী না হলে তাদেরকে (চালকদের) গাড়ি চালাতে দেয়া হয়না। এদিকে স্ট্যান্ড ফি বাবদ টাকা নেয়া হলেও বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ বাসটার্মিনালে তাদের নির্দিষ্ট কোন স্থান নেই। একেক সময় একেক স্থান থেকে মাওয়াগামী মাইক্রোবাস ছাড়া হয়। রাস্তার পাশে দাড়িয়েই যাত্রী তুলতে হয় চালকদের।

 

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর চলতি মাসের শুরুতে সারাদেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস-মিনিবাস- ট্রাক চালুর সময় চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি ওঠে। বলা হয়, চাঁদাবজি বন্ধ হলে যাত্রী ভাড়া বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি। গণপরিবহন চালুর প্রথম দিন থেকেই চাঁদাবাজরা তৎপর। চাঁদাবাজি বন্ধে পুলিশের আইজির কঠোর হুশিয়ারির পরও তারা থামছেনা। কিছু কৌশল পরিবর্তন করেছে মাত্র।

পরিবহন সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শ্রমিক এবং মালিক সংগঠনের নামে এখন সরাসরি বাস টার্মিনাল থেকে চাঁদা আদায় বন্ধ আছে। তবে এখন চাঁদা আদায় হচ্ছে বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির নামে, বাস টার্মিনালের বাইরে। এদিকে যাত্রী সাধারণের দাবী, প্রত্যেকটি পরিবহনের টিকিটের গায়ে নির্ধারিত ভাড়া উল্লেখ থাকতে হবে। পাশাপাশি পুলিশের নজরদারী বাড়াতে হবে। তাদের দাবী, করোনা পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত ভাড়া দিলেও সামাজিক দূরত্ব মানছে না কোন পরিবহন শ্রমিকরা।

মাদারীপুর জেলার এসপি মাহাবুব হাসান মুঠোফোনে বলেন, প্রতিনিয়তই পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হয়। তবে জনগণকে সচেতন হতে হবে। সামাজিক দূরত্বের ব্যাপারে তিনি বলেন, পথিমধ্যে অভিযান চালিয়ে মানবিক কারণে যাত্রী নামানো সম্ভব হয়না। এক্ষেত্রেও জনগণের সচেতনতার উপর গুরুত্ব দেন তিনি। এছাড়া খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান (বিপিএম-বার) বলেন, বর্তমান করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী কম নিলেও নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এ ব্যাপারে ট্রাফিক বিভাগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিনি।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net